ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের গুলিতে নিহত স্বর্ণা দাসের পরিবারের পাশে জামায়াত

বিএসএফের গুলিতে নিহত স্বর্ণা দাস

Shahos Datta
3 Min Read
বিএসএফের গুলিতে নিহত স্বর্ণা দাসের পরিবারের পাশে জামায়াত

মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে নিহত স্বর্ণা দাসের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দিয়েছে মৌলভীবাজার জেলা জামায়াত।

সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সকালে নিহত স্বর্ণা দাসের বাড়িতে গিয়ে তার পরিবারের হাতে আর্থিক সহায়তা তুলে দেন জেলা জামায়াতের নেতারা। এ সময় উপস্থিত ছিলেন জেলা জামায়াতের আমির প্রকৌশলী এম শাহেদ আলী, জেলা নায়েবে আমির মাওলানা আব্দুর রহমান, সহকারী সেক্রেটারি আলাউদ্দিন শাহ, জুড়ী উপজেলা আমির হাফেজ নাজমুল ইসলাম, উপজেলা নায়েবে আমির আব্দুল হাই হেলাল, উপজেলা শ্রমিক কল্যাণ সভাপতি লুৎফর রহমান আজাদী। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন পশ্চিম জুড়ী ইউনিয়ন জামায়াতের সভাপতি অ্যাডভোকেট শাখাওয়াত হোসেন, সেক্রেটারি আশরাফুল ইসলাম, সহকারী সেক্রেটারি সাজিদ মাহমুদ, আহমদ আলী, শহিদুল হক কুনু, ইউপি সদস্য মদন মোহন দাশ ও আব্দুল হেকিম বাবুল।

ইউপি সদস্য মদন মোহন দাশ বলেন, স্বর্ণা দাস তার মামার বাড়ি যাওয়ার পথে বিএসএফের গুলিতে নিহত হয়। সে স্থানীয় নিরোধ বিহারি স্কুলে পড়ালেখা করত। মৃত্যুর পরের দিন আমাকে জানানো হয়, আমি গাড়ি নিয়ে গিয়ে সীমান্ত থেকে তার লাশ নিয়ে আসি এবং দাহ করি। আমরা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই। বিএসএফ চাইলে তাকে গুলি না করে আটক করতে পারত। সরাসরি গুলি করে একটি মেয়েকে হত্যা করা কতটা যুক্তিযুক্ত?

জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির মাওলানা আব্দুর রহমান বলেন, স্বর্ণা দাসের মৃত্যুতে শুধু জুড়ী নয়, পুরো বাংলাদেশ মর্মাহত। আমরা সকল ধর্মের মানুষ শান্তিপূর্ণভাবে একসঙ্গে বসবাস করি। আমাদের মধ্যে সম্প্রীতির বন্ধন রয়েছে। অনেকের আত্মীয়স্বজন ভারতে বসবাস করেন, তাদের দেখতে যাওয়া-আসা হয়। যদি কেউ অবৈধভাবে সীমান্ত পার হয়, তার জন্য আইন আছে। তবে একজন মানুষকে গুলি করে হত্যা করা কোনো সমাধান হতে পারে না।

তিনি আরও বলেন, এই ঘটনার নিন্দা জানানোর কোনো ভাষা নেই। আমরা আন্তর্জাতিক আইনে এর বিচার দাবি করছি এবং ভবিষ্যতে এমন ঘটনা যেন আর না ঘটে, তার জন্য পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। জেলা জামায়াতের আমির প্রকৌশলী এম শাহেদ আলী বলেন, স্বর্ণা দাসের মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর আমরা সঙ্গে সঙ্গে খোঁজ নিই। আমি জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির বৈঠকে এই ঘটনার নিন্দা জানিয়েছি এবং প্রশাসনের কাছে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার অনুরোধ করেছি। তিনি আরও বলেন, ফেলানী হত্যার মতো স্বর্ণার ঘটনাও কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। মানুষকে পাখির মতো গুলি করে হত্যা করা অমানবিক। স্বর্ণা দাস কোনো চোরাকারবারি, অসৎ ব্যক্তি বা সন্ত্রাসী ছিল না। সে শুধুমাত্র তার মামার বাড়ি যেতে চেয়েছিল, সেটাই তার অপরাধ?

তিনি আরও বলেন, আমাদের যদি কার্যকর পদক্ষেপ থাকত, তবে সীমান্তে এমন ঘটনা ঘটত না। পাশের দেশকে মানুষকে পাখির মতো গুলি করে হত্যা করার অধিকার তারা কোথায় পেল? বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক দাবি করা যায়, কিন্তু সেটা বুলেট দিয়ে মানুষ হত্যা করে নয়। আমরা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই।

উল্লেখ্য, মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার শরীফপুর ইউনিয়নের লালারচক সীমান্ত দিয়ে মায়ের সঙ্গে অবৈধভাবে ভারতে যাবার পথে বিএসএফের গুলিতে স্বর্ণা দাস নিহত হয়। গত ১ সেপ্টেম্বর রাতে এই ঘটনা ঘটে। স্বর্ণা জুড়ী উপজেলার পশ্চিমজুড়ী ইউনিয়নের কালনীগড় গ্রামের বাসিন্দা পরেন্দ্র দাসের মেয়ে।

Share This Article
Leave a Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *