অযোধ্যার রাম মন্দিরে উদ্বোধনের মাত্র ছয় মাসের মধ্যেই বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। প্রথম বর্ষাতেই মন্দিরের ছাদে ফাটল দেখা দিয়েছে এবং সেই ফাটল দিয়ে বৃষ্টির পানি চুঁইয়ে পড়ছে। ভারতের বিভিন্ন স্থানে প্রাকৃতিক দুর্যোগ যেমন বন্যা ও পাহাড় ধসের মধ্যেই এই ঘটনা আলোড়ন তুলেছে।
ফাটল ও বৃষ্টির পানি প্রবাহ
রাম মন্দিরের প্রধান পুরোহিত আচার্য সত্যেন্দ্র দাস জানিয়েছেন, গত শনিবার রাতে প্রথম ভারী বর্ষণ অযোধ্যায় শুরু হয়, এরপরই মন্দিরের গর্ভগৃহের ছাদে বড় ফাটল দেখা যায়। ফাটল থেকে মন্দিরের পূজারির বসার জায়গায় পানি পড়তে শুরু করে। শুধু তাই নয়, ভিআইপি দর্শনের জন্য যেখানে সবাই সমবেত হন, সেই স্থানেও পানি পড়তে দেখা গেছে।
নির্মাণে গাফিলতির অভিযোগ
আচার্য দাস অভিযোগ করেন, মন্দির চত্বরে বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনের কোনও উপযুক্ত ব্যবস্থা করা হয়নি। এই গাফিলতির কারণে এমন বিপর্যয় ঘটেছে বলে মন্দির কর্তৃপক্ষের দাবি। এনডি টিভি জানায়, ছাদ থেকে পানি চুঁইয়ে পড়ার বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়, পরে মন্দির নির্মাণ কমিটির চেয়ারম্যান নৃপেন্দ্র মিশ্র ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে মেরামতের নির্দেশ দেন।
মন্দিরের নির্মাণ অগ্রগতি
নৃপেন্দ্র মিশ্র জানান, মন্দিরের প্রথম তলার নির্মাণ কাজ চলছে এবং এই বছরের জুলাই মাসের মধ্যে শেষ হবে বলে আশা করা হচ্ছে। পুরো মন্দির নির্মাণের কাজ ডিসেম্বরের মধ্যে সম্পূর্ণ হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
বিরোধীদের প্রতিক্রিয়া
এ ঘটনায় বিরোধী দল কংগ্রেস বিজেপির বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তোলে। উত্তরপ্রদেশ কংগ্রেস প্রধান অজয় রায় বলেন, “শহিদদের কফিন হোক বা ভগবানের মন্দির, সবকিছুই বিজেপি’র কাছে দুর্নীতির সুযোগ হয়ে উঠেছে।” তিনি আরও বলেন, “বিশ্বাস ও পবিত্রতার প্রতীকও তাদের কাছে লুটের সুযোগ মাত্র।”
রামপথের সমস্যা
৬২৪ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত রামপথের কিছু অংশেও ভাঙন দেখা দিয়েছে। বৃষ্টির পর নর্দমার পানি রামপথ সড়ক এবং আশপাশের এলাকায় ঢুকে পড়েছে। অযোধ্যার মেয়র গিরিশ পতি ত্রিপাঠী জানান, তিনি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য বিভিন্ন দল মোতায়েন করেছেন।
সমালোচনা ও দুর্নীতির অভিযোগ
বিরোধী দলগুলো অভিযোগ করেছে, বিজেপি নির্বাচনী সুবিধা পাওয়ার জন্য তাড়াহুড়ো করে মন্দির নির্মাণ করেছে এবং অযোধ্যার উন্নয়ন প্রকল্পগুলো দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত হয়েছে।