ঝাড়খণ্ডে একজন শ্রমিকের দৈনিক আয় ৩০০ টাকা, যেখানে বাংলাদেশে এটি ৮০০ টাকা। এই আয় পার্থক্যের কারণে প্রশ্ন ওঠে, কেন বাংলাদেশিরা ঝাড়খণ্ডে যাবে? ঝাড়খণ্ড ভারতের সবচেয়ে দরিদ্র রাজ্যগুলোর একটি। রাজ্যটির প্রায় ৪০% মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করে এবং ২০% এরও বেশি ৫ বছরের নিচের শিশুরা অপুষ্টিতে ভুগছে। ঝাড়খণ্ডের ৭৫% মানুষ গ্রামাঞ্চলে বাস করে, এবং মাত্র ২৫% মানুষ শহরে বসবাস করে।
ঝাড়খণ্ডের রাজনৈতিক অঙ্গনেও অনুপ্রবেশ ইস্যু নিয়ে বিতর্ক চলছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ঝাড়খণ্ডে জেএমএম (ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা) নেতৃত্বাধীন জোট সরকারকে বাংলাদেশি এবং রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশকারীদের সমর্থন করার অভিযোগে সমালোচনা করেছেন। মোদীর মতে, এই অনুপ্রবেশ সাঁওতাল পরগনা এবং কোলহান অঞ্চলের জন্য বড় হুমকি তৈরি করছে। তিনি দাবি করেন যে এর ফলে জনসংখ্যায় বড় পরিবর্তন হচ্ছে, এবং এতে উপজাতী জনসংখ্যা হ্রাস পাচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্যের পাল্টা প্রতিক্রিয়া জানিয়ে জেএমএম দাবি করেছে, প্রধানমন্ত্রী মোদী অনুপ্রবেশ ইস্যুতে মিথ্যা তথ্য ছড়াচ্ছেন। জেএমএমের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক সুপ্রিয় ভট্টাচার্য প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের সমালোচনা করে বলেন, “প্রধানমন্ত্রীর উচিত অনুপ্রবেশকারীদের বিষয়ে তার দাবির পক্ষে প্রমাণ প্রদান করা।”
প্রধানমন্ত্রী মোদী জামশেদপুরে তার বক্তৃতায় আরও উল্লেখ করেছিলেন যে বাংলাদেশি ও রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের ফলে স্থানীয় জনসংখ্যার ক্ষতি হচ্ছে এবং এটি ঝাড়খণ্ডের মানুষের জন্য নিরাপত্তাহীনতার সৃষ্টি করছে। তিনি দাবি করেন, অনুপ্রবেশকারীরা পঞ্চায়েত এবং জমি দখল করছে, যা স্থানীয় জনগণের জন্য সমস্যার সৃষ্টি করছে। এছাড়াও, মোদী অভিযোগ করেন যে, জেএমএম, আরজেডি এবং কংগ্রেস তোষণের রাজনীতি করছে এবং ক্ষমতার লোভে ঝাড়খণ্ডের মানুষদের ক্ষতি করছে।
এই বিতর্কিত ইস্যু রাজ্যের আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের আগেও রাজনৈতিক উত্তাপ বাড়িয়ে তুলেছে।