বাংলাদেশে চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার অগ্রণী ব্যাংক ছেংগারচর বাজার শাখার ভল্ট থেকে প্রায় ৭৫ লাখ ২০ হাজার টাকা উধাও হয়েছে। এই ঘটনায় ব্যাংকের ক্যাশিয়ার দীপংকর ঘোষের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। এ নিয়ে শাখা ব্যবস্থাপক মো. ইউসুফ মিয়া বাদী হয়ে গত সোমবার (২ সেপ্টেম্বর) মতলব উত্তর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে ব্যাংকের ক্যাশিয়ার দীপংকর ঘোষকে, যিনি মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার বালিয়াটি গ্রামের বলাই ঘোষের ছেলে।
মতলব উত্তর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. ছানোয়ার হোসেন মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
মামলার বিবরণ অনুযায়ী, অগ্রণী ব্যাংক ছেংগারচর বাজার শাখায় ক্যাশ অফিসার হিসেবে কর্মরত ছিলেন দীপংকর ঘোষ। গত ২৯ আগস্ট তিনি ব্যাংকে না আসায় তার মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, তার বাবা অসুস্থ, তাই আসতে দেরি হবে। কিন্তু দিনের শেষে তার মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায় এবং অফিসে তিনি আর উপস্থিত হননি।
পরে ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপক মো. ইউসুফ মিয়া দীপংকরের স্ত্রী আঁখি সাহার সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, তার স্বামী দুপুর ১২টায় অফিসের উদ্দেশ্যে বাসা থেকে বের হয়েছেন। দীপংকর ঘোষ অফিসে না আসায় ব্যাংকের ভল্ট খোলা সম্ভব হয়নি এবং তার কার্যকলাপে সন্দেহ হওয়ায় ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়।
৩০ আগস্ট পুলিশের উপস্থিতিতে ভল্ট খোলার চেষ্টা করা হয় এবং মিস্ত্রি দিয়ে গ্রিল কেটে চাঁদপুরের প্রধান শাখা থেকে আনা ডুপ্লিকেট চাবি ব্যবহার করে ভল্ট খোলা হয়। গণনা করে দেখা যায়, ভল্টে ২৭ লাখ ৭৯ হাজার ৬৮ টাকা ৭১ পয়সা রয়েছে, যেখানে ব্যাংকের রেকর্ড অনুযায়ী এক কোটি দুই লাখ ৯৯ হাজার ৬৮ টাকা ৭১ পয়সা থাকার কথা ছিল। ফলে ৭৫ লাখ ২০ হাজার টাকা কম পাওয়া যায়।
মামলায় আরও উল্লেখ করা হয়েছে যে, দীপংকর ঘোষ সম্প্রতি কয়েকদিন কাঁধে ঝুলানো একটি ব্যাগ নিয়ে অফিসে আসতেন এবং সেটি নিয়ে বের হয়ে যেতেন। তিনি ব্যাংকের ক্যাশ অফিসার হওয়ায় ভল্টের চাবি তার কাছে থাকত। অভিযোগ করা হচ্ছে, তিনি কৌশলে বা অন্য অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের সহযোগিতায় এই টাকা আত্মসাৎ করেছেন এবং পলাতক রয়েছেন।
ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপক মো. ইউসুফ মিয়া জানিয়েছেন, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অডিট সম্পন্ন করেছেন এবং পুলিশ তদন্ত করছে। মতলব উত্তর থানার পুলিশ পরিদর্শক মো. ছানোয়ার হোসেন বলেন, মামলার তদন্ত চলছে এবং ক্যাশিয়ার দীপংকর ঘোষের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।